ঢাকার একটি প্রাণীচিকিৎসা কেন্দ্রে কাজ করেন ড. রায়হান কবির। প্রায় প্রতিদিনই তাঁকে এমন বিড়ালের কেস দেখতে হয় যাদের পা ভেঙে গেছে—কখনো উচ্চতা থেকে পড়ে, কখনো গাড়ির ধাক্কায়, আবার কখনো বাসার ভেতর অসাবধানতা থেকে। তিনি জানালেন,
“অনেক মালিকই বুঝতে পারেন না তাদের বিড়ালের পা ভেঙেছে। কারণ বিড়াল অনেক সময় ব্যথা সহ্য করে নেয়। তারা চিৎকার করে না, কেবল একটু ল্যাংড়া হয়ে হাঁটে বা একদমই নাড়িয়ে না দেখে বসে থাকে।”
ড. রায়হান র অভিজ্ঞতায়, সবচেয়ে বড় ভুলটি এখানেই ঘটে।
“প্রথম দিকে এসব লক্ষণ হালকা মনে হয়। কেউ কেউ দুই-এক দিন অপেক্ষা করেন, কেউ আবার গুগলে ঘেঁটে ঘরোয়া কিছু ট্রাই করে ফেলেন। অথচ ঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে বেশিরভাগ ভাঙা পা সারিয়ে তোলা যায়। কিন্তু দেরি হলে ভাঙা হাড় ভুলভাবে জোড়া লাগে, ইনফেকশন হয়, কখনো কখনো পা কেটে ফেলাও লাগে।”
এই অভিজ্ঞতা শুধুই তাঁর একার না। দেশের প্রায় প্রতিটি প্রাণীচিকিৎসা কেন্দ্রে এমন ঘটনা নিয়মিতই দেখা যায়। কারণ যেটাই হোক, পা ভেঙ্গে গেলে অবহেলা না করে বিড়ালের পা ভেঙে গেলে করণীয় কি সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। এই আর্টিকেলে থাকবে সমস্যার শুরু থেকে সমাধান অব্দি সবকিছুই। সো, পড়তে থাকুন।
বিড়ালের পা ভেঙেছে কি না যে লক্ষণ দেখে বুঝবেন
বিড়াল ব্যথা পেলেও অনেক সময় সেটা প্রকাশ করে না। তারা অনেক কিছু চুপচাপ সহ্য করে নেয়, ফলে পা ভেঙে গেলেও মালিকের পক্ষে সঙ্গে সঙ্গে বোঝা কঠিন হতে পারে। তবে কিছু আচরণ আর শারীরিক লক্ষণ আছে যেগুলো খেয়াল করলেই আপনি আন্দাজ করতে পারবেন বিড়ালের পায়ে আসলে কী হয়েছে।
১. হাঁটাচলায় অস্বাভাবিকতা
সবচেয়ে আগে চোখে পড়ে চলাফেরার পরিবর্তন। হঠাৎ করে এক পা টেনে হেঁটে বেড়ানো, পা মাটিতে না রাখা, বা একেবারেই না হাঁটা—এসবই হতে পারে ভাঙা হাড়ের লক্ষণ। অনেক সময় বিড়াল তিন পা দিয়ে চলাফেরা করে, যেন ব্যথার জায়গাটা এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার যেসব বিড়াল সাধারণত লাফায়, তাদের আচরণে হঠাৎ এমন বিরতি এলেই সেটা ভাবার মতো ব্যাপার।
২. ব্যথা প্রকাশের আচরণ
যখন আপনি ব্যথার জায়গা ধরতে যান, তখন বিড়াল কঁকিয়ে ওঠে, আঁচড় দেওয়ার চেষ্টা করে বা হঠাৎ রাগান্বিতভাবে ফোঁস ফোঁস করে। সাধারণত বিড়াল ব্যথা লুকিয়ে রাখে, কিন্তু আচরণে এমন বিরক্তি বা প্রতিক্রিয়া থাকলে বুঝতে হবে ভেতরে সমস্যা আছে।
৩. পা ফুলে যাওয়া বা আকৃতির অস্বাভাবিকতা
ভাঙা পা অনেক সময় ফুলে যায়, অন্য পায়ের তুলনায় বড় দেখায় বা বাঁকা হয়ে থাকে। কখনও কখনও ওই জায়গায় হাত দিলে গরম অনুভব হয়। বাইরের দিকে কিছু না দেখালেও ভেতরে হাড় সরে গিয়ে এমন হতে পারে।
৪. খাওয়া-দাওয়া ও আচরণে পরিবর্তন
পেট ব্যথা থাকলে যেমন আমরা খেতে চাই না, তেমনি বিড়ালও ব্যথা পেলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। অনেক সময় দেখা যায়, সে এক জায়গায় বসে আছে, ডাকে সাড়া দিচ্ছে না বা অস্বাভাবিকভাবে বেশি ঘুমাচ্ছে। এসব আচরণ আগে যদি না থাকত, তবে সেটা ভাঙা পায়ের প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
৫. অস্বাভাবিকভাবে বসে থাকা বা শরীর গুটিয়ে রাখা
অনেক সময় বিড়াল শরীর গুটিয়ে বসে থাকে, যেন ব্যথার জায়গাটা আড়াল করতে চাইছে। কেউ কাছে গেলেই আরও বেশি গুটিয়ে যায়, কখনও বা পা ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ে, যেটা স্বাভাবিক না।
সব মিলিয়ে এই লক্ষণগুলো একসাথে মিলে গেলে আপনি সহজেই ধারণা করতে পারেন পায়ে কিছু একটা হয়েছে। ড. রায়হান কবির বলছেন, “অনেক সময় মচকানো আর হাড় ভাঙার উপসর্গ দেখতে প্রায় একই রকম হয়। তাই ঘরে বসে অনুমান না করে দ্রুত এক্স-রে করানোই সবচেয়ে নিরাপদ।”
যে সকল কারণে বিড়ালের পা ভেঙ্গে যেতে পারে
বিড়ালের পা ভাঙার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো হঠাৎ দুর্ঘটনা। তবে দুর্ঘটনার ধরনও একেক রকম হতে পারে—কারওটা মারাত্মক, কারওটা খুব ছোট একটা মিসস্টেপ থেকেও ঘটতে পারে। নিচে আমরা সেই সম্ভাব্য কারণগুলো ব্যাখ্যা করছি:
১. দুর্ঘটনা বা উপরে থেকে পড়ে যাওয়া
বিড়ালকে সাধারণত “নবম তলার ফ্ল্যাট থেকে পড়েও বেঁচে যাওয়া প্রাণী” বলে ধরা হয়, কারণ তারা ল্যান্ড করার সময় পায়ের ব্যবহার জানে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, সব সময় শরীর ঠিকভাবে সামলাতে পারে না। অনেক সময় জানালা দিয়ে লাফ দিতে গিয়ে, সিঁড়ি বা বারান্দা থেকে পিছলে পড়ে গিয়ে, কিংবা অন্য কোথাও ওঠার সময় ভারসাম্য হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এই ধরনের দুর্ঘটনায় পা কিংবা কোমরের হাড় ভেঙে যেতে পারে, বিশেষ করে যদি জায়গাটা কংক্রিট হয় বা পড়ে যাওয়ার উচ্চতা বেশি হয়।
২. গাড়ির চাপা পড়া
অনেক বিড়াল ঘরের বাইরেও ঘোরাঘুরি করে। বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে গলির ভেতরেও গাড়ি চলে, সেখানে এমন দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। রাস্তায় চলাফেরা করার সময় অনেকে বিড়ালকে খেয়াল করে না। হালকা চাপায়ও হাড় ভেঙে যেতে পারে, আর গাড়ির চাকার নিচে পড়লে সেটি হতে পারে ভয়াবহ। অনেক সময় এমন দুর্ঘটনার পর বিড়াল ভয়ে পালিয়ে যায়, ফলে মালিক বুঝতেই পারে না আসলে কী হয়েছে।
৩. লড়াই বা ঝগড়ার কারণে চোট
বিশেষ করে যদি আশেপাশে অন্য বিড়াল থাকে বা স্ট্রিট ক্যাটদের সঙ্গে ঝামেলায় পড়ে, তাহলে তীব্র মারামারি হতে পারে। অনেক সময় তারা লাফিয়ে আক্রমণ করে, কামড়ায় বা একে অপরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এই ধরণের শারীরিক সংঘর্ষে পা মচকে যেতে পারে বা ভেঙেও যেতে পারে। এমনকি কখনও কখনও কুকুর বা অন্য প্রাণীর আক্রমণেও পায়ের হাড়ে ক্ষতি হতে পারে।
৪. হালকা আঘাত থেকে শুরু হয়ে ফ্র্যাকচারে রূপ নেওয়া চোট
সবসময় এমন না যে একবারেই পা ভেঙে যায়। অনেক সময় ছোট একটা আঘাত হয়—যেমন খেলতে গিয়ে কোথাও ধাক্কা লাগা বা ভারি কিছু পড়ে যাওয়া। তখন হয়তো হাড়ে ফাটল ধরে, যেটা শুরুতে বোঝা যায় না। কিন্তু চলাফেরা করতে করতে সেই ফাটল বাড়তে থাকে এবং এক সময় গিয়ে তা পুরোপুরি ভেঙে যায়। এমন ‘স্ট্রেস ফ্র্যাকচার’ ধীরে ধীরে তৈরি হয়, যা শুরুতে চোখে পড়ে না, কিন্তু শেষপর্যন্ত বড় বিপদ ডেকে আনে।
বিড়ালের পা ভেঙে গেলে চিকিৎসা
বিড়ালের পা ভেঙে গেলে সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে ঘরে বসে চিকিৎসা করার চেষ্টা করা। কিন্তু অনেক সময় ভেটেরিনারিয়ান কাছে পাওয়া সম্ভব হয় না, কিংবা ক্লিনিকে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লেগে যেতে পারে। এই সময়টুকুতে মালিক হিসেবে কিছু প্রাথমিক কাজ করে দিলে বিড়ালের ব্যথা কমবে, ঝুঁকিও কমে যাবে। চলুন নিচে এমন কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানাই।
১. বিড়ালকে শান্ত রাখা ও নাড়াচাড়া বন্ধ করা
বিড়াল যখন ব্যথায় কাতরাচ্ছে, তখন তাকে জোর করে ধরার চেষ্টা করবেন না। বরং হালকা গলায় কথা বলুন, মাথায় হাত বুলিয়ে দিন, যাতে সে ভয় না পায়। বিড়াল যত বেশি নড়াচড়া করবে, তত বেশি ব্যথা পাবে এবং হাড়ের ভাঙা অংশ আরও সরতে পারে। তাই প্রথম কাজ হলো তাকে শান্ত রাখা। চাইলে অন্ধকার জায়গায় রাখা যেতে পারে, কারণ অন্ধকারে তারা বেশি শান্ত থাকে।
২. ভাঙা পায়ে অপ্রয়োজনীয় চাপ বা নড়াচড়া বন্ধ করা
ভাঙা পা যদি স্পষ্ট বোঝা যায়, তাহলে সেই পায়ে যেন কোনোভাবেই চাপ না পড়ে সেটা নিশ্চিত করুন। আপনি চাইলে একটা তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে শরীরের সঙ্গে পা জড়িয়ে রাখতে পারেন, কিন্তু খুব টাইট করে নয়। কোনো অবস্থাতেই ঘরে বসে ব্যান্ডেজ বা স্প্লিন্ট দেওয়ার চেষ্টা করবেন না, কারণ সঠিকভাবে না জানলে উল্টো ক্ষতি হতে পারে।
৩. নরম ও আরামদায়ক জায়গায় রাখা
বিড়ালকে শক্ত মেঝেতে না রেখে একটা নরম তোশক, কুশন বা বালিশের ওপর রাখতে পারেন। এতে পা-টা বাড়তি ধাক্কা খাবে না। আপনি চাইলে ক্যারিয়ারের ভেতর একটা মোটা কাপড় বিছিয়ে তাকে বসাতে পারেন। ক্যারিয়ার না থাকলে ছোট কোনো খালি বাক্সও চলবে, যাতে সে উঠে দাঁড়াতে না পারে।
৪. দ্রুত একজন ভেটেরিনারিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করা
ভাঙা পায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি হলো এক্স-রে করা—কারণ বাইরে থেকে দেখা গেলেও, ভেতরের হাড়ের অবস্থা বোঝা যায় না। তাই সময় নষ্ট না করে যত দ্রুত সম্ভব একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। যদি আপনার আশপাশে কোনো ক্লিনিকে পৌঁছানো কঠিন হয়, কিংবা বাসায় রওনা দিতে দেরি হচ্ছে, তাহলে আপনি চাইলে PriyoPets-এর অনলাইন ভেট সাপোর্ট নিতে পারেন। ওদের অনলাইন কনসালটেশন সার্ভিসে রেজিস্টার করে একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভেটের সঙ্গে কথা বলেই আপনি বুঝে নিতে পারবেন—তাৎক্ষণিক কী করা জরুরি, আর কী করা একেবারেই ঠিক হবে না।
শুধু কি চিকিৎসা? না প্রয়োজন চিকিৎসার পরবর্তী যত্ন
অনেকেই ভাবেন একবার চিকিৎসা করালেই বিড়াল ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আসল কাজটা শুরু হয় চিকিৎসার পর থেকে। এক্স-রে, গিপ বা অপারেশনের পর বিড়ালকে সাবধানে সামলানো জরুরি। হাড় জোড়া লাগা বা পায়ের শক্তি ফিরে আসা পর্যন্ত তার চলাফেরা, খাবার, ওষুধ—সবকিছুর ওপর নজর দিতে হয়।
প্রথমেই, ভেটেরিনার যেসব ওষুধ দিয়ে দেন, সেগুলো ঠিকমতো ও সময়মতো খাওয়ানো অত্যন্ত জরুরি। অনেক বিড়াল মুখে ওষুধ নিতে চায় না। সেক্ষেত্রে সিরাপ হলে ড্রপার দিয়ে খাওয়ানো যায়, আর ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট হলে একটু কৌশলে মুখে ঢোকাতে হয়। কেউ কেউ খাবারের ভেতরে ওষুধ মিশিয়ে দেয়, তবে সেটা সব সময় কার্যকর নাও হতে পারে। আর ভুলে গিয়ে কোনো ডোজ মিস হলে ব্যথা বাড়তে পারে বা সংক্রমণ হতে পারে—যা পুরো চিকিৎসা পেছনে ঠেলে দিতে পারে।
চিকিৎসার পর বিড়ালকে শান্ত রাখা খুব দরকার। একে তো ব্যথা, তার ওপর গিপ বা ব্যান্ডেজের কারণে অস্বস্তি—এতে ওরা অনেক সময় খিটখিটে হয়ে পড়ে। আশপাশে যদি শিশু বা অন্য পোষা প্রাণী থাকে, তাহলে তাদের থেকে বিড়ালটিকে কিছুদিন আলাদা রাখাই ভালো। নরম বিছানার ওপর শুয়ে থাকার মতো একটা নিরিবিলি জায়গা তৈরি করে দিন, যাতে ওর বিশ্রাম হয় এবং নিজেকে নিরাপদ মনে করে।
গিপ বা ব্যান্ডেজ থাকা অবস্থায় চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। হঠাৎ লাফ দিলে বা সিঁড়ি ভাঙলে আবার পা মচকে যেতে পারে। চেষ্টা করুন ওকে একটি নির্দিষ্ট ঘরে সীমাবদ্ধ রাখতে, যেখানে বিছানা, খাবার ও পানির বাটি থাকবে—কিন্তু দৌড়ানোর মতো জায়গা না থাকবে।
এই সময়টায় খাবার নিয়েও একটু বাড়তি যত্ন নিতে হয়। অনেক বিড়ালের খাওয়ার রুচি কমে যায়। তাই সহজপাচ্য ও হালকা খাবার যেমন সেদ্ধ মাছ, চিকেন ব্রথ, কিংবা নির্দিষ্ট ক্যাট রিকভারি ফুড খাওয়ানো ভালো। প্রচুর পানি খাচ্ছে কি না সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—প্রতিদিন ব্যান্ডেজ বা গিপের ওপর একবার নজর দেওয়া। যদি পানি লেগে যায়, দুর্গন্ধ আসে বা জায়গাটা ফুলে উঠে—তাহলে দেরি না করে আবার ভেটেরিনারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। নিজের হাতে কখনোই গিপ খোলার চেষ্টা করবেন না, কারণ এতে হাড় সঠিকভাবে বসতে না-পারার ঝুঁকি থাকে।
ভেটেরিয়ানদের মতে, “অনেক সময় দেখা যায়, মালিকেরা মনে করেন গিপ খুললেই বিড়াল একদম আগের মতো হয়ে যাবে। কিন্তু সত্যি বলতে, পুরোপুরি সেরে ওঠার জন্য গিপ খোলার পরও অন্তত ৭–১০ দিন একটু সতর্ক থাকতে হয়।”
বিড়ালের পা ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে মিথ ও ভুল ধারনা
আমাদের আশপাশে অনেকেই মনে করেন, পা ভাঙা কোনো বড় সমস্যা না—বিড়াল নিজেই সময়ের সঙ্গে সেরে ওঠে। কেউ আবার বলেন, গিপ লাগানো ফালতু ঝামেলা, ওষুধ দিলেই চলে যাবে। এসব ধারণা একেবারেই ভুল, আর এই ভুল থেকেই বিড়ালের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে।
প্রথমত, অনেকেরই বিশ্বাস—“পা ভাঙলে বিড়াল নিজে নিজেই সেরে যাবে”। এটা অনেকটা মানুষের মধ্যে প্রচলিত “সর্দি-কাশি এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়” টাইপের ভুল চিন্তা। বাস্তবতা হলো, হাড় ভেঙে গেলে সেটি সঠিকভাবে বসানো, ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা, সংক্রমণ এড়ানো—এই তিনটি ধাপে চিকিৎসা জরুরি। যদি হাড় সোজা হয়ে না বসে, তাহলে পায়ের গঠন বদলে যেতে পারে, স্থায়ী খুঁড়িয়ে হাঁটা দেখা দিতে পারে—এমনকি হাঁটাচলার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলতে পারে।
আরেকটা প্রচলিত কথা হলো—“গিপ লাগানো জরুরি নয়, শুধু ওষুধ খেলেই হবে”। অনেকে এমনও আছেন, যারা গিপ বা ব্যান্ডেজ করান না, ভেবে নেন বিড়াল এমনিতেই সামলে নেবে। কিন্তু এটা করলে হাড় বাঁকা হয়ে জোড়া লাগে। শুধু ব্যথা কমানো বা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে হাড় সারানো সম্ভব না। গিপ বা স্প্লিন্টের মূল কাজ হলো হাড়টিকে স্থির রাখা, যাতে সেটা নিজের জায়গায় বসে গিয়ে জোড়া লাগে।
চূড়ান্ত মন্তব্য
আশা করি পুরো বিষয়টি ভালো ভাবে বুজতে পেরেছেন যে, বিড়ালের পা ভেঙে গেলে করণীয় কি হবে। বিড়াল খুব সংবিদনশীল প্রাণী, এরা নিজেরা না পারে কিছু বলতে না পারে আপনাকে বুঝাতে। এদের সমস্যা হলে এরা নিজেকে গুটিয়ে দেয়। উপরে উল্লেখ্যিত লক্ষণ গুলোর আলোকে আপনি বুজতে পারবেন আপনার বিড়ালের কি হয়েছে এবং আপনার কি করণীয়।
যদি কোনো কিছু বুজতে অসুবিধে হয় সেখেতে অভিজ্ঞ ভেট এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সরাসরি কিংবা অনলাইন ভেট এর সাথে যোগাযোগ করে আপনার বিড়ালের সমস্যার কথা জানাতে পারেন সমাধানের জন্য। তাছাড়া PriyoPets এর ফেসবুক গ্রুপ ও ফেজবুক পেজে ম্যাসেজ করেও আপনার সমস্যার সমাধান পাবেন।