Cat Health

বিড়ালের গ্যাস হলে করণীয় | গ্যাস হওয়ার কারণ ও সমাধান 

How to treat a gassy cat

বিড়াল হঠাৎ করে চুপচাপ হয়ে গেছে? আগের মতো খেলছে না, বা হঠাৎ করে গন্ধযুক্ত বায়ু দূষণ করছে? এমন হলে সেটা মোটেও মজার বিষয় না, বরং ওর পেটে গ্যাস জমেছে কি না, সেটা চিনে নেওয়ার সময়। পোষা বিড়ালের হজমে একটু গোলমাল হলেই গ্যাস হতে পারে, আর সেটা যদি সময়মতো ধরা না পড়ে, তবে শরীরের আরও জটিল সমস্যা ডেকে আনতে পারে। তাই এই আর্টিকেলে আমরা একে একে দেখবো — কীভাবে বুঝবেন বিড়ালের পেটে গ্যাস হয়েছে, এর পেছনে সম্ভাব্য কারণ কী, এবং বিড়ালের গ্যাস হলে করণীয় কি হবে। শুধু তাই নয়, কোন ঘরোয়া বা চিকিৎসা পদ্ধতি সবচেয়ে উপযোগী হতে পারে সেই বিষয়েও জানাবো।  

বিড়ালের গ্যাস হওয়ার লক্ষণ 

বিড়ালের শরীরে হজমজনিত সমস্যা হলে সেটা মুখে বলতে পারে না। কিন্তু কিছু আচরণ বা শারীরিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সে সংকেত দেয়। গ্যাস বা পেট ফুলে যাওয়ার মতো অস্বস্তিকর অবস্থা যদি হয়, তাহলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে।

১) পেট ফুলে যাওয়া

যখন বিড়ালের পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে, তখন পেটটা ফুলে যায় বা শক্ত হয়ে যেতে পারে। এই ফোলাভাবটা হাত দিয়ে স্পর্শ করলে বোঝা যায়, এবং কখনো কখনো বিড়ালটা নিজের পেট চাটতে বা চাপড়াতে থাকে অস্বস্তির কারণে।

একটি স্টাডি অনুযায়ী, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যায় আক্রান্ত পোষা প্রাণীদের মধ্যে প্রায় ৩০-৪০% ক্ষেত্রে abdominal bloating বা swelling লক্ষ্য করা গেছে। (Source: Journal of Feline Medicine and Surgery)

কীভাবে বোঝা যাবে:

  • পেটটা ফোলা দেখাবে
  • বিড়াল বসে থাকতে চাইবে না বা শুয়ে পড়বে অন্যভাবে
  • শরীরের সামনের অংশ নিচু করে রাখবে (prayer position)

২) ঘন ঘন বায়ু দূষণ 

পোষা বিড়াল হঠাৎ করে যদি খুব ঘন ঘন পাদ দিতে শুরু করে এবং তাতে বাজে গন্ধ থাকে, তবে সেটা হজমের সমস্যার সিগন্যাল। সাধারণত স্বাস্থ্যবান বিড়াল দিনে মাঝে মাঝে হালকা পাদ দেয়, কিন্তু ঘন ঘন ও দুর্গন্ধযুক্ত হলে তা অস্বাভাবিক।

VetInfo.com মতে, flatulence বা পাদ হওয়া সাধারণত খাবার পরিবর্তন, lactose intolerance, অথবা খাওয়ার সময় বাতাস গেলা (aerophagia) থেকে হয়ে থাকে।

৩) খেতে না চাওয়া

গ্যাস জমে গেলে পেটের মধ্যে চাপ পড়ে। ফলে বিড়াল খেতে চায় না বা খাবার দেখলে পাশ কাটিয়ে যায়। কখনো খাবারের গন্ধ নিলেও খাবে না — এটা স্পষ্ট লক্ষণ যে সে অস্বস্তিতে আছে।

অনেক মালিক এই সময় ভেবে বসে বিড়াল বেছে খাচ্ছে, কিন্তু আসলে ওর শরীর বলছে – “আর খাবার নিতে পারছি না”।

গম্ভীর আচরণ, লুকিয়ে থাকা

বিড়াল সাধারণত ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করলে চুপচাপ হয়ে যায়। আরেকটি সাধারণ আচরণ হলো — নিজেকে কোথাও লুকিয়ে ফেলা। বিড়াল যদি হঠাৎ চুপসে যায়, আগের মতো খেলাধুলা বা আদর না চায়, কিংবা নির্জনে থাকতে চায়, তবে সেটা অসুস্থতার লক্ষণ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যথা বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় বিড়ালরা তাদের নরমাল বিহেভিয়ার বদলে “withdrawal behavior” দেখায় — যেমন সোফার নিচে লুকানো বা খাটের কোণে গিয়ে বসে থাকা।

বমি বা পাতলা পায়খানা

গ্যাস শুধু অস্বস্তি তৈরি করে না, মাঝে মাঝে হজমের আরেকটা সমস্যা ট্রিগার করে – যেমন বমি বা ডায়রিয়া। এটা যদি একদিনের বেশি চলে, তবে অবশ্যই সেটা সিরিয়াস কিছু হতে পারে।

American Veterinary Medical Association (AVMA) বলছে, পোষা প্রাণীদের মধ্যে যদি বমি ও পাতলা পায়খানা একসাথে দেখা যায়, সেটা সাধারণত ইনফেকশন, টক্সিন ইনটেক বা হজমের ব্যাঘাতের লক্ষণ হতে পারে।

বিড়ালের গ্যাস হওয়ার কারণ 

বিড়ালের পেটে গ্যাস হওয়াটা হালকা কোনো বিষয় না। এটি তার ডায়জেস্টিভ সিস্টেমে সমস্যা বা অস্বস্তির একটা স্পষ্ট লক্ষণ। অনেক সময় এটা খাবারের জন্য হয়, আবার কখনো হতে পারে অভ্যন্তরীণ রোগের উপসর্গ। নিচে কিছু সাধারণ কারণ তুলে ধরা হলো।

খাবারজনিত কারণ 

সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো খাবার। কম মানের ক্যাট ফুড, বাসি বা পঁচা খাবার, অথবা দুধের মতো ল্যাকটোজযুক্ত খাবার খেলে বিড়ালের হজমে সমস্যা হয়।

  • অনেক মালিক বিড়ালকে দুধ খাওয়ান, অথচ বেশিরভাগ বিড়াল lactose intolerant হয়। এতে তাদের পেটে গ্যাস, ডায়রিয়া ও অস্বস্তি হয়।
  • Low-grade cat food-এ প্রায়ই অতিরিক্ত ফিলার বা কৃত্রিম উপাদান থাকে — এগুলো হজমে বাঁধা সৃষ্টি করে।
  • Spoiled বা একদিনের বেশি পুরনো মাছ বা মাংস থেকেও গ্যাস্ট্রিক হয়।

Cornell University College of Veterinary Medicine বলছে, বিড়ালের হজমে সমস্যা দেখা দিলে প্রথম সন্দেহ হওয়া উচিত খাবার সংক্রান্ত কারণ।

খুব দ্রুত খাওয়া

কিছু বিড়াল অতিরিক্ত ক্ষুধা পেলে খুব দ্রুত খেয়ে ফেলে। এতে খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত বাতাস গিলে ফেলে (aerophagia), যা সরাসরি গ্যাসের অন্যতম কারণ।

  • দ্রুত খাওয়ার ফলে খাবার ঠিকমতো চিবিয়ে খাওয়া হয় না, এতে হজমে অসুবিধা হয়।
  • এই সমস্যা অনেকটাই দেখা যায় মাল্টি-ক্যাট হাউজহোল্ডে, যেখানে খাবার নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়।

Vet-রা প্রায়ই slow-feeder bowl ব্যবহারের পরামর্শ দেন, যাতে বিড়াল আস্তে আস্তে খায়।

খাদ্যে পরিবর্তন

এক ধরনের খাবার থেকে হঠাৎ অন্য ধরনের খাবারে পরিবর্তন করলে বিড়ালের হজমের সিস্টেম অবাক হয়ে যায়। এতে গ্যাস, ডায়রিয়া বা বমি দেখা দিতে পারে।

  • New protein source (e.g., chicken থেকে beef এ সুইচ করলে) – সমস্যা করতে পারে।
  • ভেটরা বলে থাকেন, “Any diet transition should be gradual, over 7–10 days” — যাতে হজম সিস্টেম মানিয়ে নিতে পারে।

অনেক মালিক একদিনে ফুড চেঞ্জ করে ফেলেন, যা বিপদ ডেকে আনে।

ইনফেকশন, কৃমি বা হজমের সমস্যা

গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ইনফেকশন, পাকস্থলীতে কৃমি বা এনজাইমের অভাবে হজমে সমস্যা হলে পেটে গ্যাস জমে যেতে পারে।

  • Roundworms, hookworms, tapeworms ইত্যাদি কৃমি পেটে জায়গা নিয়ে গ্যাস তৈরি করে।
  • পেটে ইনফেকশন হলে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, ফলে গ্যাস এবং অস্বস্তি হয়।

বাংলাদেশে পোষা বিড়ালের মধ্যে কৃমির সংক্রমণের হার ৪৫-৬০% পর্যন্ত হতে পারে বলে স্থানীয় ভেট রিপোর্টগুলোতে পাওয়া গেছে।

খাবারের সাথে বাতাস গেলা (Aerophagia)

এটা অনেকটা “খাওয়ার সময় কথা বলা” জাতীয় অবস্থা — খাবারের সঙ্গে বাতাসও পেটে চলে যায়। এই বাতাস হজমে না মিশে গ্যাস তৈরি করে।

  • এটা বেশি হয় যখন বিড়াল দ্রুত খায় বা চাপা আবেগে থাকে (anxiety eating)।
  • প্লাস্টিকের বা একসাথে অনেক খাবার রাখলে এই প্রবণতা বাড়ে।

এটা ছোট মনে হলেও long-term সমস্যা হলে bloating ও ইনফ্লেমেশন তৈরি করতে পারে।

বিড়ালের গ্যাস হলে করণীয়

ঘরোয়া উপায়ে বিড়ালের গ্যাস হলে করণীয় 

যদি লক্ষণগুলো হালকা হয় এবং বিড়াল খুব বেশি অস্থির না হয়, তাহলে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে তাকে স্বস্তি দেওয়া যায়। তবে লক্ষণ যদি একদিনের বেশি থাকে বা বমি, ডায়রিয়া দেখা যায়, তাহলে দেরি না করে ভেটের সাথে যোগাযোগ করা জরুরি।

হালকা easily-digestible খাবার দিন

গ্যাস হলে হজমের উপর চাপ কমানো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য কিছুদিনের জন্য হালকা ও সহজে হজমযোগ্য খাবার দেওয়া উচিত। যেমন:

  • সেদ্ধ মুরগি (boneless, skinless chicken breast)
  • সাদা ভাত (plain white rice)

Priyopet Online Vet Doctor সুপারিশ করে, পেটের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল আপসেট হলে easily digestible bland diet খাওয়ানো ভালো।

পানি খাওয়ার উৎস বাড়ান

গ্যাসজনিত সমস্যা হলে শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে হাইড্রেশন খুবই দরকার। অনেক বিড়াল পানি খেতে চায় না, তাই একটু কৌশল করতে হয়। করণীয়:

  • ফোয়ারা টাইপ পানির ফাউন্টেন ব্যবহার করুন (Cats love running water!)
  • ভেজা খাবারের পরিমাণ বাড়ান
  • মাঝে মাঝে পানিতে সামান্য চিকেন ব্রথ মিশিয়ে দিন (নোনতা ছাড়া)

Cornell Feline Health Center উল্লেখ করেছে যে, পানির অভাবে হজম ধীর হয় এবং পেটের সমস্যা বাড়ে।

ধীরে খাওয়ানোর জন্য slow-feeder ব্যবহার করুন

দ্রুত খাওয়া মানেই খাবারের সঙ্গে বাতাস গেলা এবং গ্যাসের ঝুঁকি। এই সমস্যা কমাতে slow-feeder bowl অসাধারণ কার্যকর। এগুলোর মধ্যে খাবার লুকানো থাকে বা আলাদা করে পরিবেশন করা হয় — ফলে বিড়াল ধীরে খেতে বাধ্য হয়।

American Veterinary Medical Association (AVMA) এবং PetMD – উভয়ই বলেছে, “Slow feeders can reduce aerophagia and improve digestion.”

একবারে বেশি খাবার না দিয়ে ভাগ করে খাওয়ান

দিনে দুই বা তিন বারে অনেক খাবার না দিয়ে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে খাওয়ানো ভালো। এতে বিড়ালের হজমে চাপ কমে। অনেক বিড়াল একবারে বেশি খেলে পেট ফুলে যায়, গ্যাস হয়। দিনে ৩–৪ বার ছোট পরিমাণ খাবার দিলে এটা এড়ানো যায়।

একদিন না খাইয়ে রেখে পর্যবেক্ষণ

একদিন খাবার বন্ধ রেখে শুধু পানি দেওয়া যায় — যদি বিড়াল সুস্থ এবং হাইড্রেটেড থাকে। এতে পেট বিশ্রাম পায় এবং কোন খাবার সমস্যার উৎস কিনা তা বোঝা যায়। এটা শুধু প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ বিড়ালের ক্ষেত্রে কার্যকর। বাচ্চা বিড়াল বা অসুস্থ অবস্থায় থাকা বিড়ালের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।

VCA Hospitals – “In some cases, withholding food for 12–24 hours under supervision can help reset the digestive system.”

কখন ডাক্তার দেখাবেন 

সব সমস্যাই ঘরোয়া উপায়ে সামাল দেওয়া যায় না। কিছু লক্ষণ থাকে যেগুলো ইঙ্গিত দেয় যে পেছনে বড় কোনো শারীরিক জটিলতা লুকিয়ে আছে। নিচের অবস্থাগুলোর যেকোনোটা দেখা গেলে দেরি না করে ভেটের কাছে নিয়ে যেতে হবে। 

১) যদি পেট খুব ফুলে যায়

বিড়ালের পেট অস্বাভাবিক রকম শক্ত বা ফুলে গেলে এটা স্রেফ গ্যাস নয়। হতে পারে intestinal blockage, fluid retention বা internal inflammation। যদি পেটে টোকা দিলে ড্রাম জাতীয় শব্দ হয় বা বিড়াল ব্যথায় কুঁকড়ে থাকে — দ্রুত ডাক্তারের প্রয়োজন।

২) খাওয়া একদম বন্ধ

বিড়াল যদি একেবারে খাওয়া বন্ধ করে দেয়, সেটাকে হালকা ভাবে নেয়া যাবে না। ২৪ ঘণ্টা কিছু না খাওয়া বিড়ালের লিভার ফাংশনে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে — একে বলে Hepatic Lipidosis। বিশেষ করে মোটা বিড়ালের ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক হতে পারে।

৩) বমি বা রক্তযুক্ত পায়খানা

গ্যাস্ট্রিক থাকলে মাঝে মাঝে হালকা বমি হতে পারে। কিন্তু যদি বমি ঘন ঘন হয়, বা মলের সঙ্গে রক্ত আসে, সেটা মারাত্মক সংকেত। এই ধরনের উপসর্গ intestinal bleeding, infection বা parasite overload এর লক্ষণ হতে পারে।

৪) ২৪ ঘণ্টার বেশি সমস্যাটা থাকে

যেকোনো হালকা উপসর্গ (পেট ফুলে যাওয়া, কম খাওয়া, ঘন ঘন পাদ) যদি একদিনের বেশি স্থায়ী হয় — সেটা অবহেলা করা যাবে না। ২৪ ঘণ্টার বেশি গ্যাস থাকলে শরীরের অন্য সিস্টেমে প্রভাব পড়তে পারে — যেমন dehydration, electrolyte imbalance, fatigue ইত্যাদি।

বিঃদ্রঃ যদি আপনার এড়িয়াতে ভালো ভেটেরিয়ান ডাক্তার না থাকে, কিংবা থাকলেও যাওয়ার মত সময় সুযোগ না হয় তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা, এখন অলাইনে ভেটেরিয়ান ডাক্তার দেখানোর সুযোগ থাকছে। এর জন্য PriyoPets এর Online Vet এর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। 

বিড়ালের গ্যাসের ঔষধ 

Simethicone (Gas-X)

Simethicone একটি অ্যান্টি-ফোমিং এজেন্ট, যা পেটের গ্যাসের বুদবুদ ভেঙে দিয়ে অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। এটি সাধারণত Gas-X, Phazyme, Mylicon ইত্যাদি নামে বাজারে পাওয়া যায়।

বিড়ালের জন্য ডোজ

  • পরিমাণ: সাধারণত 0.5 মি.লি. থেকে 3 মি.লি. পর্যন্ত প্রতি 8 থেকে 12 ঘণ্টা অন্তর প্রয়োজনে দেওয়া যেতে পারে।
  • প্রস্তুতি: তরল ফর্মুলেশন (liquid formulations) বিড়ালের জন্য বেশি উপযোগী।
  • সতর্কতা: ওষুধ দেওয়ার আগে অবশ্যই ভেটের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, সঠিক ডোজ এবং প্রয়োগ পদ্ধতি নির্ভর করে বিড়ালের ওজন, বয়স এবং স্বাস্থ্যের উপর।

ব্যবহারের নির্দেশনা

  • ওষুধটি সাধারণত দ্রুত কাজ করে, প্রায় 1 থেকে 2 ঘণ্টার মধ্যে প্রভাব দেখা যেতে পারে। তবে সম্পূর্ণ আরাম পেতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।
  • যদি কোনো ডোজ মিস হয়, তবে যত দ্রুত সম্ভব তা দিন। তবে পরবর্তী ডোজের সময় হয়ে গেলে মিসড ডোজটি এড়িয়ে যান এবং স্বাভাবিক রুটিন অনুসরণ করুন।

 কখন ব্যবহার করবেন না 

যদি বিড়ালের পেট অত্যন্ত ফুলে যায় বা Gastric Dilatation-Volvulus (GDV) এর লক্ষণ দেখা যায়, তবে এটি একটি জরুরি অবস্থা এবং অবিলম্বে ভেটের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এই অবস্থায় Simethicone ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি বিড়ালের ওষুধে অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা থাকে, তবে এই ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়।

অন্যান্য ওষুধ

বর্তমানে, Simethicone ছাড়া বিড়ালের গ্যাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ সুপারিশ করা হয় না। তবে, যদি গ্যাসের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য উপসর্গ (যেমন বমি, ডায়রিয়া, খাওয়া বন্ধ করা) দেখা যায়, তবে ভেটের পরামর্শ অনুযায়ী অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত।

বিড়ালের গ্যাস হওয়া প্রতিরোধে করণীয় 

গ্যাসজনিত সমস্যা থেকে বিড়ালকে রক্ষা করতে চাইলে কিছু অভ্যাসগত পরিবর্তন এবং সচেতনতা জরুরি। নিচে কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো:

1)  মানসম্মত ক্যাট ফুড বেছে নিন

নিম্নমানের খাবারে অতিরিক্ত ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট বা ফিলার উপাদান থাকতে পারে, যা বিড়ালের হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। উচ্চমানের, প্রোটিন-সমৃদ্ধ এবং সহজে হজমযোগ্য খাবার বেছে নিন।

২) হঠাৎ খাবার পরিবর্তন করবেন না

খাবারের হঠাৎ পরিবর্তনে বিড়ালের হজমে সমস্যা হতে পারে। নতুন খাবারে রূপান্তর করতে হলে ধাপে ধাপে করুন। পুরনো খাবারের সাথে নতুন খাবার মিশিয়ে দিন এবং ৭-১০ দিনের মধ্যে ধীরে ধীরে নতুন খাবারের পরিমাণ বাড়ান।

৩) নিয়মিত কৃমির ওষুধ দিন

অন্ত্রের কৃমি বা পরজীবী গ্যাসের অন্যতম কারণ হতে পারে। নিয়মিত কৃমির ওষুধ দেওয়া বিড়ালের হজম স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভেটের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতি ৩-৬ মাস অন্তর কৃমির ওষুধ দিন।

৪) ধীরে খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন

দ্রুত খাওয়ার ফলে বিড়াল অতিরিক্ত বাতাস গিলে ফেলে, যা গ্যাসের কারণ হতে পারে। ধীরে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে বিশেষ ফিডার ব্যবহার করুন। স্লো-ফিডার বোল বা পাজল ফিডার ব্যবহার করে খাওয়ার গতি কমান।

৫) মানসিক চাপ কমান

মানসিক চাপ বা উদ্বেগ বিড়ালের হজমে প্রভাব ফেলতে পারে। একটি শান্ত, নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করুন। বিড়ালের জন্য নির্দিষ্ট খেলার জায়গা, পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ এবং নিয়মিত খেলার সময় নির্ধারণ করুন।

চূড়ান্ত মন্তব্য 

পোষা বিড়ালের যত্ন নিতে গিয়ে গ্যাস বা হজমজনিত সমস্যাকে হালকাভাবে নিলে চলবে না। এটা শুধু অস্বস্তির ব্যাপার না — পেছনে বড় কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকির ইঙ্গিতও হতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে খাবারের মান, খাওয়ার অভ্যাস আর পানির পরিমাণের দিকে। আর কোনো অস্বাভাবিকতা টানা একদিনের বেশি থাকলে দেরি না করে পেশাদার ভেটের সাহায্য নেওয়াই ভালো। 

আছা করি উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে বিড়ালের গ্যাস হলে করণীয় কি সেই বিষয়ে জানতে পেরেছেন। এক্ষেত্রে বিড়ালের অবস্থা অতি ভয়াবহ হলে অন্য কোথাও না গিয়ে PriyoPets এর Online Vet দেখাতে পারেন। শুধু তাই নয়, ব্যাসিক পরামর্শের জন্য নির্দিধায় আমাদের ফেসবুক পেজ অথবা ফেসবুক গ্রুপে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে পরামর্শ নিতে পারেন। 

author-avatar

About Salim Mahamud

I am the author of PriyoPets. Here I publish very helpful content about cat health, cat food, cat behavior, and other things that a cat owner needs to know. Personally, I am also a cat lover, and I have two cats also, so I have good knowledge about it.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *